
‘তুমি না মরলে আমি মাহিরের হতে পারব না।’ — জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল নেতা জুবায়েদ হোসেন ছুরিকাহত অবস্থায় বাঁচার আকুতি জানালে এভাবেই প্রতিক্রিয়া জানান তার প্রেমিকা বার্জিস শাবনাম বর্ষা।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান লালবাগ জোনের ডিসি মল্লিক আহসান উদ্দিন সামী।
তিনি বলেন, ‘জুবায়েদ তখনও জীবিত ছিল। দোতলায় দরজায় নক করেও সাড়া না পেয়ে তিনতলায় ওঠে। সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা বর্ষাকে দেখে সাহায্য চাইলে বর্ষা বলে — “তুমি না মরলে আমি মাহিরের হতে পারব না।”’
এর আগে ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস. এন. মো. নজরুল ইসলাম জানান, জুবায়েদ হত্যাকাণ্ডে মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন বর্ষা। তার সাবেক প্রেমিক মাহির রহমান এবং মাহির দুই বন্ধু ফারদিন আহমেদ ও আইলান মিলে এ হত্যাকাণ্ড ঘটায়।
তিনি আরও বলেন, বর্ষার সঙ্গে মাহিরের সম্পর্ক থাকলেও পরবর্তীতে জুবায়েদের প্রেমে পড়েন বর্ষা। কিন্তু মাহিরকে ভুলতে না পেরে জুবায়েদকে হত্যার পরিকল্পনা করেন তিনি। ২৬ সেপ্টেম্বর থেকেই এ পরিকল্পনা শুরু হয়।
উল্লেখ্য, নিহত জুবায়েদ হোসেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও কুমিল্লা জেলা ছাত্রকল্যাণ পরিষদের সভাপতি ছিলেন।
গত রোববার বিকেলে টিউশনির ছাত্রী বর্ষার বাসায় যাওয়ার পথে মাহিরের সঙ্গে দেখা হয় জুবায়েদের। সেখানে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে জুবায়েদ ছুরিকাঘাতে নিহত হন।
ময়নাতদন্ত শেষে সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে জানাজা শেষে তার মরদেহ গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়।
পুলিশ কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, “এ ঘটনায় রাজনৈতিক কোনো সম্পৃক্ততা নেই, এটি একটি ত্রিভুজ প্রেমের হত্যাকাণ্ড। বরগুনার মিন্নির ঘটনার সঙ্গে এর মিল রয়েছে।”
এদিকে, ঘটনার পর বংশাল থানার সামনে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। পরে রাত ১১টার দিকে পুলিশ আরমানিটোলার নূরবক্স লেনের নিজ বাসা থেকে বর্ষাকে হেফাজতে নেয়। এরপর মাহিরসহ আরও দুই সহযোগীকেও গ্রেফতার করা হয়।